আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসাইন বলেছেন, একসময় আমাকে ‘জঙ্গি অর্থদাতা’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল কিন্তু এই ধরনের অভিযোগ ও অপবাদের সাথে আমার নূন্যতম সংশ্লিষ্টতা নেই।
সোমবার সিলেট দুপুরে নগরের একটি রেস্তোরায় সংবাদ সম্মেলনে এমনটি বলেন তিনি।
তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের পক্ষে একনিষ্ঠ একজন সৈনিক ছিলাম, বিদেশে থেকে শেখ হাসিনার পতনের জন্য প্রবাসী ভাই বোন দের সংযুক্ত করা ও মধ্যে প্রাচ্যে দেশের মানুষের কাছে শেখ হাসিনার নির্যাতনে কথা তুলে ধরা ছিলো আমার প্রধান কাজ ।
জাকির হোসাইনের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভার খলাছড়া গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন জাকির।
সংবাদ সম্মেলনে জাকির বলেন, ২০১৮ সালে ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা বিভিন্ন বক্তব্যে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন আমি নাকি মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরকারের পতনের উদ্দেশ্যে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছি এবং ২০১৮ সালে আরব আমিরাত সরকারী সফরে গিয়ে আমাকে দেশে ফিরেয়ে নিয়ে আনার জন্য আমিরাত সরকারকে প্রস্তাব দেন। কিন্তু আরব আমিরাত সরকার শেখ হাসিনার অভিযোগের কোন সত্যতা না পেয়ে শেখ হাসিনার এমন ভিত্তিহিন প্রস্তাবকে নাকোচ করে দেয়।
তিনি বলেন, এর পর খুনি শেখ হাসিনা আমার বিরুদ্ধে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যেমে অপ-প্রচার শুরু করে যা আমাকে সমাজে সামাজিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে, তবে আমি বিচলিত হয় নি কারন আমি ন্যায়ের পক্ষে ছিলাম ।
জাকির বলেন, এই অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন মিডিয়া ট্রায়েলের মাধ্যেমে আমাকে ‘জঙ্গি অর্থদাতা’ আখ্যায়িত করে আমার পাসপোর্ট নবায়ন বন্ধ করা হয়, দেশে ফেরার পথে বাধা দেওয়া হয়, এমনকি সামাজিক ভাবে আমাকে হেয় করা হয়, দেশে আমার সকল পরিবার আত্মিয় স্বজনরা চরম নির্যাতনের শিকার হন যা আপানারা খোঁজ নিলে জানতে পারবেন। কিন্তু শেখ হাসিনার ভিত্তিহিন মিথ্যা এ অভিযোগ আজ পর্যন্ত তিনি প্রমাণ করতে পারেন নি এটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত একটি অপচার, যার লক্ষ্য ছিল আমাকে সমাজ ও রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া।
জুলাই আন্দোলনেও সম্পৃক্ত ছিলেন জানিয়েসিংবাদ সম্মেলনে জাকির বলেন, বাংলাদেশে জুলাই আন্দোলন শুরু হয় তখন আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে আমিরাতে ১৩ টি মিছিল অনুষ্টিত হয় যার ফলোশ্রুতিতে ২৪ ঘন্টার ব্যাবধানে প্রায় ৬ শতাধিক মিছিলকারীকে গ্রেপ্তার করে আরব আমিরাতের পুলিশ। প্রথমে ২ শতাধিক বন্দি কে যাবাজ্জিবন সহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রধান করে আমিরাত সরকার।
তিনি বলেন, ওই সময় গ্রেপ্তারের তালিকায় আমার যুবদলের সভাপতি সহ অসংখ্য নেতা-কর্মী ছিলো যেহেতু আমি আরব আমিরাত বিএনপির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি সেই হিসেবে আমাকে সব কিছু মোকাবেলা করতে হয়েছিলো।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, আমাদের জকিগঞ্জ-কানাইঘাট এলাকা হচ্ছে খনিজ সম্পদে ভরপূর, ইতোমধ্যে জকিগঞ্জের একটি গ্যাসের কুপের কাজ চলছে। আমি ইতোমধ্যে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম পেট্রোলিয়াম কোম্পানি জনাবী গ্রুপের সাথে একটি প্রাথমিক চুক্তি সই করেছি যেখানে বলা আছে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হলে জনাবী গ্রুপ সিলেট তথা বাংলাদেশে তেল গ্যাস আহরণে বড় বিনিয়োগ করবে, ইনসাআল্লাহ আমাদের সফলতা আসবে।
তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি সিলেট-৫ আসনের মানুষ আমাকে যেমন ভালো বেসেছেন, তেমনি ভবিষ্যতেও পাশে থাকবেন। আমার একটাই লক্ষ্য এলাকার উন্নয়ন, সিলেটের উন্নয়ন, মানুষের অধিকার, এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা।